সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অবৈধ দখলদার সালাহ উদ্দীন আহমদ গং গত ১৬ অক্টোবর একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়।
সভায় সালাহ উদ্দীন গং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগারমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
১৯ অক্টোবর সালাহ উদ্দীন আহমদের উক্ত বিষোদগারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’র এর সদস্যবৃন্দ।
তারা বলেন, সালাহ উদ্দীন আহমদ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান নন, তিনি হলেন ইউনিভার্সিটির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাবেক চেয়ারম্যান। গত ২ জুন-২০২০ ইং জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে কঠোর লকডাউন চলাকালে সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে নিয়েছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্মারক নং-শিম/শা:১৭/১০এম-০৮/২০১১(ঠড়ষ.১/৭৪৯, তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্মারক নং: ইউজিসি/বে:বি:/৫৫৩(২)/২০১০/৯৮৭০, তারিখ: ০৬ অক্টোবর ২০১৩ এর ডকুমেন্ট মূলে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠাতা হলেন লায়ন মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।
প্রতিবাদে ট্রাস্টিগণ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনো সালাহ উদ্দীন আহমদকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা/উদ্যোক্তা হিসেবে সম্বোধন করেননি। ট্রাস্ট গঠনের কয়েক মাস পর তিনি উখিয়ার জনসভায় সালাহ উদ্দীনকে লক্ষ্য করে কক্সবাজারে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নিতে বলেন। সালাহ উদ্দীন এ উদ্যোগে ব্রতী না হয়ে কার্যত প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রতারণা করেছেন এবং লায়ন মো: মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে গঠিত ১০ জনের ট্রাস্টে বিনা অনুদানে ট্রাস্টি হিসেবেই থেকে গেলেন; বয়োজ্যেষ্ঠতায় দোহাই দিয়ে চেয়ারম্যান পদখানি বাগিয়ে নিলেন। জনসভায় যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার নামোল্লেখ করেছেন, তাই তাঁর সম্মানে কিছু টাকা অনুদান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করেননি বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পরে এসে এক টাকা অনুদানও না দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে লায়ন মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্যের অনুদানে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় কেড়ে নিয়ে নির্লজ্জভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়ে চলেছেন!
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দ বলেন, গত ০২/০৬/২০২০ ইং সালাহ উদ্দীন আহমদ বিশ্ববিদ্যালয় দখলের আগে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে লায়ন মোহাম্মদ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা হিসেবে মেনে নিয়ে নিজে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে লুটপাট-অনিয়ম চালানো ও তা আঁকড়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশনার বাইরে ইউনিভার্সিটি পরিচালনা করা সম্ভব নয়। যদি কেউ দখলদারিত্ব ও স্বেচ্ছাচারিতা কায়িম করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে যায় আর তা ঘটেছে গতবছর সালাহ উদ্দীন আহমদের দখলদারিত্ব কায়িমের পর থেকেই। গত ১৬/০৬/২০২১ ইং তারিখ দৈনিক বণিক বার্তায় সংবাদের শিরোনাম হয়েছে “একাডেমিক ও আর্থিক অনিয়মে কক্সবাজার ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সুপারিশ ইউজিসির”। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকদের স্থলে অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ দিয়ে সালাহ উদ্দীন আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারসহ কোন অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক। ফলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। গত ০৯/০৯/২০২১ ইং তারিখ দৈনিক সমকালে সংবাদ ছাপা হয়েছে,“ভিসি নিয়োগসহ নানা দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন।” সপ্তাহের প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ ছাপা হচ্ছে অথচ দখলদারিত্বের পূর্বে ৭ বছরে কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী কোন সংবাদ মিডিয়ায় আসেনি।
ট্রাস্টিবৃন্দ বলেন, যাদের বাবা মুক্তিযুদ্ধে শৌর্যবীর্যের স্বাক্ষর রাখায় বঙ্গবন্ধুর হাত থেকে মেডেল লাভ করেন,যারা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ আর বর্তমানে আওয়ামী লীগ করেন তারা কিভাবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি হয়, তা আমাদের বোধগম্য নয়। পক্ষান্তরে যাদের বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী, চিহ্নিত রাজাকার আর যারা দলীয় পরিচয়ে আখের গোছাতে ব্যস্ত তারাই বুঝি স্বাধীনতার স্বপক্ষের বড় ঠিকাদার ! আসল কথা হল, বিশ্ববিদ্যালয়ে দখলদারিত্ব নিষ্কন্টক করার জন্য সালাহ উদ্দীন-গিয়াসুদ্দীন এই হীন মানসিকতায় বিষোদগার করছেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এসব চক্রান্ত কখনো সফল হবে না। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা ও নৈতিকতার জায়গা, দখলদারিত্ব ও বাড়াবাড়ির স্থান এখানে হয় না। কক্সবাজারবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপহারকে নিয়ে এসব দখলদারিত্ব সত্যিই বিপজ্জনক। যাদেরকে স্বাধীনতা বিরোধী বলা হচ্ছে তাদের জন্ম স্বাধীনতার পরে। দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তাদের কোন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড নেই। ফলে কোন আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। তারা দেশপ্রেমিক ও শিক্ষানুরাগী বলেই উচ্চশিক্ষা খাতে কোটি কোটি টাকা অনুদান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০১৩ সালে বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন, এজহারভুক্ত কোন যুদ্ধাপরাধী কিংবা রাজাকারের সন্তানকে নয়। সালাহ উদ্দীন অহমদ এযাবতকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন না করে নিজের দখলদারিত্ব পাকাপোক্ত করার জন্য শিক্ষার্থীদের ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ তছরূপ করছেন। গিয়াসুদ্দীন উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। এই দুই স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি রক্ষায় কক্সবাজারের সর্বস্তরের সমাজসেবী, শিক্ষানুরাগী ও সুশীল শ্রেণীকে এগিয়ে আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দ উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
Leave a Reply